আপনার বেডরুম রাখুন সাজানো গুছানো ও পরিষ্কার সহজ কিছু উপায়ে।
বেডরুম রাখুন সাজানো গুছানো ও পরিষ্কার
শোবার ঘর, পুরো ঘরের মধ্যে এ ঘরের আবেদনটা সবসময়ই বেশি।সারা দিন , শত ব্যস্ততা, যান্ত্রিক নগরের কোলাহল সবকিছু শেষে আপনি একটু প্রশান্তি তালাশ করেন আপনার প্রিয় শোবার ঘরে। এ ঘর ছোট হলে অনেক সময় জিনিসপত্র রাখতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া ঘর এতে অগোছালো ও মনে হতে পারে। বলুন তো অগোছালো ঘরে কি শান্তি খুঁজে পাওয়া আদৌ সম্ভব !
চলুন না আজ দেখে নেওয়া যাক কিভাবে আপনার শোবার ঘরটাকে আপনি সুন্দর ও ছিমছাম ও পরিষ্কার রাখবেন। আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি স্বল্প কিছু আইডিয়া। আশা করি কাজে দেবে।
১ : ব্যবহার করুন বক্স বেড : বক্স বেড ব্যবহার করুন। এ ধরনের বিছানায় নিচে বাক্সের মতো করে থাকে। মূলত একে বক্স বিছানা বলা হয়। বেডের নিচে একটি ড্রয়ার দেওয়া থাকে। সেই ড্রয়ারে খুটিনাটি বিভিন্ন জিনিস রাখতে পারেন। যেমন : মশারি, বাচ্চাদের বই খাতা, চার্জার লাইট, ইত্যাদি। এতে আপনার ঘরে প্রচুর জায়গা বাঁচবে। অথবা কাপড় রাখার ড্রয়ার হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন বিছানার সাথে এটাচড ড্রয়ারটাকে। এতেও জায়গা বাঁচবে।
২: ব্যবহার করুন মানানসই আয়না : আপনার শোবার ঘর যদি ছোট থাকে তাহলে এক কাজ করুন। ঘরে একটি বড় মাপের ওয়াল আয়না ফিট করে নিন। এতে আপনি ড্রেসিং টেবিলের ঝামেলা থেকে বেঁচে যাবেন। আর আয়নার রিফ্লেকশনের কারণে আপনার ঘরটাও বড় দেখাবে। আয়নার উপর ইচ্ছা হলে ছোট ছোট লাল নীল বাতি লাগিয়ে দিন। এতে রাতে আপনার শোবার ঘরটায় দারুণ আলো ছায়ার খেলা সৃষ্টি হবে।
৩: খুব হালকা রঙকে প্রাধান্য দিন : শোবার ঘরটায় খুব বেশি ডার্ক রঙের কিছু ব্যবহার না করাই ভালো। জানালার পর্দা থেকে শুরু করে বিছানার চাদর সব কিছুতেই প্রাধ্যান্য দিন খুব হালকা রঙকে। এতে আপনার ঘর অনেক বড় দেখাবে। হালকা রঙের কারণে ঘর বড় ও গোছানো মনে হবে। ঘরে আরামের জন্য বা দৃষ্টির সৌন্দর্য্যের জন্য হালকা রঙকেই প্রাধান্য দিন।
৪: ধূলা সরাতে ব্যবহার করুন হেয়ার ড্রায়ার : বেডরুমে ধূলাবালি জমলে তা সরাতে ব্যবহার করুন হেয়ার ড্রায়ার। হেয়ার ড্রায়ার খুব সহজেই ময়লাগুলো সরাবে। বেডরুমে রাখা ল্যাম্পশেড বা জুয়েলারি কোন কিছু ড্যামেজও করবে না।
৫: ওয়ারড্রোব ম্যানেজ : কখনোই ওয়ারড্রোবে অপ্রয়োজনীয় কাপড়-চোপড় জমা করে রাখবেন না। মনে রাখবেন ওয়ারড্রোব আপনার বেডরুমের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ওয়ারড্রোবের ভেতর খুব অগোছালো করে রাখলে মানসিক প্রশান্তিটা মিলবেনা। যে কাপড়গুলো পড়া হয় না তা সরিয়ে নিন।সপ্তাহে অন্তত একদিন ওয়ারড্রোবের কাপড়গুলো নতুন করে ভাঁজ করে রাখুন। আর একটা কথা, কখনোই ওারড্রোবে অপরিষ্কার কোন কাপড় রাখবেন না।
৬: সাপ্তাহিক পরিচ্ছন্নতা : প্রতি সপ্তাহে আলাদা করে আপনার বেডরুম ক্লিন করুন। সাত দিনে একবার আপনার বেডশীট বালিশের ওয়্যার , থ্রো কভার সবকিছু ধুয়ে দিন। ঘরের পর্দা পনেরো দিন পর পর ধুয়ে নিতে পারেন। ঘরের সব ফার্নিচার প্রতিদিন মুছলেই ভালো এতে বাড়তি ধূলা-বালি জমবে না। খুব বেশি ধূলাবালির ভেতর থাকলে সাইনাসের সমস্যা হতে পারে।
৭: ব্যবহার করুন সাইড টেবিল : আপনার বেডরুমের সাথে মিল রেখে একটি সাইড টেবিল কিনে নিতে পারেন। আকারে ছোট দেখে একটি সাইড টেবিল সিলেক্ট করুন। সাইড টেবিলের উপর টেলিফোন, ল্যাম্পশেড ইত্যাদি রেখ দিন। এছাড়া সাইড টেবিলের ড্রয়ারগুলো আপনার ঘরের অনেক বাড়তি জায়গা বাঁচিয়ে দিবে। এতে ছোটখাটো বিভিন্ন ধরনের জিনিস সুন্দর করেই রাখতে পারবেন।
৮: ধূলাহীন ব্লাইন্ড : অনেকই পর্দার বিপরীতে এখন ব্লাইন্ড ব্যবহার করছেন জানালাতে। এক্ষেত্রে অবশ্যই বেডরুমের ব্লাইন্ডটা ধূলাহীন থাকা খুব জরুরী। ভিনেগাররের সাথে পানি মিশিয়ে ব্লাইন্ড নিয়মিত পরিষ্কার করুন। এতে ধূলা কম জমবে। পনেরো দিন পর পর ব্লাইন্ড খুলে পরিষ্কার করুন। এখন বাজারে শুধু সাদা নয় ভিন্ন রঙের ব্লাইন্ডও পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলোও বেছে নিতে পারেন। ময়লা চোখে পড়বে কম আর পরিষ্কারে ঝক্কিটাও কম হবে।
৯:,ফার্নিচার নির্বাচন : ফার্নিচার নির্বাচন আপনার বেডরুমের জন্য খুব জরুরী। বেডরুম যতটা সম্ভব হালকা করে সাজান। বাড়তি বা অপ্রয়োজনীয় ফার্নিচার এই ঘরে না রাখাই ভালো। খুব হালকা কাজ ও হালকা গড়নের ফার্নিচার নির্বাচন করুন। এতে আপনার বেডরুম ছিমছাম মনে হবে। এমন ফার্নিচার নির্বাচন করুন যা সব কাজ সহজ করে দেবে বা দুই ধরনের কাজে আসবে। অনেকটা বলতে পারেন অল ইন ওয়ানের মতোন ! যেমন একটি বড় স্লিম ওয়ারড্রোব একইসাথে সাইড টেবিল, কাপড়, বই খাতা রাখার কাজে আসতে পারে আবার ড্রেসিং টেবিলের কাজেও আসতে পারে।
১১ : জানালার কাঁচ পরিষ্কার : শোনতে কিছুটা অদ্ভুত লাগবে হয়তো। কিন্তু সত্যি জানালার কাঁচ ঘরের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করতে পারে। আপনার বেডরুমের প্রতিটি জানালা রাখুন ঝকঝকে চকচকে! কারণ জানালার কাঁচে মলা জমে থাকলে তা দৃষ্টিকটু মনে হতে পারে। এজন্য পত্রিকার কাগজ ব্যবহার করুন। ভেজা কাপড় দিয়ে জানালা মুছে নিন এরপর একটি শুকনো পত্রিকার কাগজ দিয়ে মুছে নিন। দেখুন কেমন চকচক করছে জানালা।
১৩: পরিষ্কার রাখুন সব কিছু : মনে রাখবেন শুধু মাত্র বিছানার চাদর বা ঘর পরিষ্কার করলেই হবে না।আপনার বেড রুমের ল্যাম্পশেড, দেয়ালঘড়ি সব কিছু নিয়মিত পরিষ্কার করুন। ক্ষুদ্র কোন জিনিসেও ধূলা জমতে দেবেন না। সবকিছু প্রতিদিন মুছে নিন। এতে পরে পরিষ্কার করতে কষ্টও হবে না।
১৪ : এয়ার ফ্রেশনার : আপনার ঘরের সৌন্দর্য্য শোভা বা মোহময় বৃদ্ধি করতে এয়ার ফ্রেশনার দারুণ কার্যকর। ঘরে সুঘ্রাণ ধরে রাখতে পারে বিভিন্ন ধরনের সুঘ্রাণযুক্ত মোমবাতি। অথবা ব্যবহার করতে পারেন ল্যাবেন্ডার সৌরভের এয়ার ফ্রেশনার। এতে ঘরে কোন প্রকার দূর্গন্ধ থাকবে না। আর এয়ার ফ্রেশনারের সৌরভে আপনার মনও থাকবে প্রফুল্ল।
এছাড়াও জেনে নিন বাড়তি কিছু টিপস।
বেডরুমকে যতটা সম্ভব খোলামেলা ও গোছানো রাখুন। সৌন্দর্য্য নয় বরং আরামটাকেই প্রাধান্য দিন। একটু ম্যানেজম্যান্টের মাধ্যমেই আপনার প্রিয় বেডরুম সব সময় পরিষ্কার ও সাজিয়ে রাখতে পারেন।এজন্য মেনে চলতে পারেন উপরের আইডিয়াগুলো। আশা করি পোস্ট টা কাজে আসবে আপনাদের। ভালো থাকুন।
Wow
ReplyDeleteঅসাধারণ। আপনার তথ্য গুলো খুব কার্যকর। ধন্যবাদ
ReplyDelete# Cleaning Services in Dhaka